আমের ইতিহাস ও চাষাবাদ সম্পর্কে জানুন

সম্মানিত পাঠক আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই নিশ্চয়ই ভালো। আজকে আপনাদের জন্য রসালো ফল আম নিয়ে কিছু তথ্য শেয়ার করব।যদি আমের ইতিহাস সম্পর্কে আপনারা না জেনে থাকেন।তবে আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
আমের-ইতিহাস-ও-চাষাবাদ-সম্পর্কে-জানুন
হরেক রকমের আম পাওয়া যায় বাংলাদেশে। এত সব জাতের আম এল কোথা থেকে বা এদের নাম করনই বা হল কিভাবে।মিষ্টি স্বাদ আর স্বাদের রহস্য সব কিছুর পেছনে রয়েছে ইতিহাস ।আমের এ রকম নানা রহস্যর পেছনে রয়েছে কিছু ইতিহাস । এসব ইতিহাস নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি আলোচনা করা হবে।

ভূমিকা

কথায় আছে না মাছের রাজা রুই আর শাকের রাজা পুঁই।আর ফলের রাজা আম ।আম কথাটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে রসালো একটি ফলের ছবি ।যেটা টসটসে রসালো আর দিল-খোশ করা মিষ্টতা স্বাদ । আম আমাদের কাছে খুব পরিচিত হলেও ধারণা করা হয় আমের উৎপাদন সর্বপ্রথম হয়েছিল প্রাচীন ভারতে । আমাদের দেশে সাধারণত রাজশাহী , চাঁপাইনবাবগঞ্জ আর সাতক্ষীরায় আমের ফলন সব থেকে বেশি হয় । 

আম নিয়ে আছে অনেক প্রবাদ , আছে অনেক সাহিত্য। রবি ঠাকুর থেকে শুরু করে নজরুল ,মধুসূদন সবাই ছিল একেবারে আমের পোকা ।এই আমেরই রয়েছে আবার নানা ধরনের জাত ।যেমন- ফজলি , ল্যাংড়া , গোপালভোগ ,হাড়িভাঙ্গা, গৌরমতী ইত্যাদি।

গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রসালো ফল হচ্ছে আম।বর্তমান সময়ে সব থেকে জনপ্রিয় ফলের মধ্যে নিঃসন্দেহে বলা যায় আমের অবস্থান সবার ঊর্ধ্বে । এত জনপ্রিয় ফলটির জন্মস্থান জানা স্বাভাবিক কারণেই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমের উৎপত্তিস্থল বা জন্মস্থান নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে এখন পর্যন্ত দেশগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম ।

আমের ইতিহাস

ফলের রাজা আম।আম খেতে সবাই ভালোবাসে বিশ্বের এমন কোন দেশ নেই যে যেখানে আম পছন্দ করে না । সবাই আম পছন্দ করে পৃথিবীতে সবচেয়ে সুস্বাদু ফল হচ্ছে আম । প্রখ্যাত চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং ৬৩২ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যে এ অঞ্চলে ভ্রমণে এসে বাংলাদেশের আমকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করে তোলেন।

মোগল সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫) ভারতের শাহবাগের দাঁড়ভাঙায় এক লাখ আমের চারা রোপণ করে। এ উপমহাদেশে প্রথম একটি উন্নত জাতের আম বাগান সৃষ্টি করে আমকে আরো উচ্চতর আসনে বসান।

আমের পরিচয়

আমের ইংরেজি নাম হল ম্যাংগো ,আর বৈজ্ঞানিক নাম হল ‘ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা’ তবে এ ফল ভারতীয় অঞ্চলের কোথায় প্রথম দেখা গেছে তা নিয়ে অনেক মতবিরোধ রয়েছে ।এমন বিরোধ থাকলেও আমাদের এই জনপদই যে আমের আদি বাস এ সম্পর্কে আম বিজ্ঞানীরা একমত পোষণ করেছে । 

ইতিহাস থেকে জানা যায় , খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭-এ আলেকজান্ডার সিন্ধু উপত্যকায় আম দেখে ও খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এ সময়ই আম ছড়িয়ে পড়ে মালয় উপদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও মাদাগাস্কারে।বিজ্ঞানী ড. সুনীল কুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, আমের আদি জন্মস্থান আসাম থেকে সাবেক ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার) পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল। 


সে অর্থে বাংলাদেশের পূর্বাংশও আমের জন্মভূমির দাবিদার। যেসব জাতের আম এ দেশে দেখা যায়, তার অধিকাংশ জাতেরই সৃষ্টি সেসব অঞ্চলে। অথচ নিয়তির কী পরিহাস, সেই জন্মস্থানেই আম ভালো হচ্ছে না। ভালো হচ্ছে ঠিক দেশের উত্তরাঞ্চলে ও ভারতের মালদহ জেলায়। কবে কখন আমের জন্ম, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে ফলটি যে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এ দেশে জন্মে আসছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

সম্রাট আকবরের আমের প্রতি আসক্তি নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। একবার সম্রাট আকবর এক ভোজসভার আয়োজন করলেন। সেই ভোজসভায় রাজন্যবর্গসহ মন্ত্রী–সভাসদেরা হাজির হলেন। ভোজসভায় সম্রাট আকবরের একজন প্রিয় সভাসদ বীরবলও উপস্থিত ছিলেন। 

বীরবল পেট পুরে বিভিন্ন খাবার খেলেন। বীরবল সম্রাটকে জানালেন, তিনি এত খেয়েছেন যে তার পেটে আর খাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই, আর নতুন করে কিছু খেতে পারবেন না। এমন সময় বীরবলের পাত্রে একজন খাবার পরিবেশনকারী বেশ কয়েক টুকরা আম রেখে যান। বীরবল আমের লোভ সামলাতে পারলেন না। আমের সেই টুকরাগুলো খেলেন তৃপ্তিসহ।

আমের নামকরণ

আমের নাম কেন আম হল আর ইংরেজিতে বা কেন ম্যাংগো বলা হয় ।আমের কি আর কোন নাম আছে এসব কথা নিয়ে রয়েছে অনেক ধরনের কথা ইংরেজ ও স্প্যানিশরা আমকে বলে ম্যাঙ্গো, পর্তুগিজরা বলে ম্যাঙ্গা। শব্দ দুটি তামিল শব্দ Man-key বা Man-gay থেকে উদ্ভূত। বাংলার আমকে জার্মান, ইতালিয়ান, গ্রিক, হিব্রু, জাপানি ও ইংরেজি ভাষায় বলা হয় ‘ম্যাঙ্গো’। 

থাইল্যান্ডে আমকে বলা হয় ‘মা-মুয়াং’। প্রকৃতিপ্রেমী আমিরুল আলম খান তাঁর বাঙলার ফল বইয়ে আমের আরও ২৩টি নামের উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো আম্র, কামশর, কামবল্লভ, কামাঙ্গ, কীরেষ্ট, কোকিলবাস, কোকিলোৎসব, চ্যুত, নৃপপ্রিয়, পিকরাগ, প্রিয়ঙ্কু, বসন্তদূত, তুঙ্গভীষ্ট, মধুলী, মাদাঢ্য, মাধবট্টম, মন্মথালয়, মধ্বারস, রসাল, সহকার, সুমদন, সিধুরস, সোমধারা। বলা বাহুল্য, এসবই প্রাচীন পুঁথি বা সাহিত্যনির্ভর বিভিন্ন লেখকের রাখা অর্থবোধক নাম। 


ফলটা গাছ থেকে পাকলে খসে পড়ে, এ জন্য নাম চ্যুত। আম সব সময়ই রাজাদের প্রিয় ফল, সে জন্য নাম নৃপপ্রিয়। ফলটি রসাল বলে এর নামের সঙ্গে বিভিন্ন নামকারক রস শব্দটা জুড়ে দিয়েছেন। যেমন-মধ্বারস, রসাল, সিধুরস ইত্যাদি। মিষ্টি স্বাদের বলে এর নাম মধুলী। তবে আম হিসেবেই এ উপমহাদেশে সে বেশি পরিচিত।

আম চাষ

আম চাষে জলবায়ু, মাটি, জাত নির্বাচন, রোপণ কৌশল, সেচ, কীটপতঙ্গ ও রোগ ব্যবস্থাপনা এবং ফসল কাটা সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িত। জলবায়ু এবং মাটিঃ আম গাছ গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে বৃদ্ধি পায়, 24°C থেকে 30°C (75°F থেকে 86°F) পর্যন্ত তাপমাত্রা পছন্দ করে। আম চাষের জন্য জৈব উপাদান সহ ভাল-নিষ্কাশিত মাটি প্রয়োজন। বেলে দোআঁশ বা ল্যারিটিক মাটি আম চাষের জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়।

বৈচিত্র্য নির্বাচনঃ সফল চাষের জন্য সঠিক আমের জাত নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আলফোনসো, ফজলি, হিমসাগর(খিরসাপাত), গোপালভোগ, মহনভোগ, ল্যাংড়া, আম্রপালির মতো জাতগুলি তাদের স্বাদ, ফলন এবং বাজারের চাহিদার জন্য জনপ্রিয়। কৃষকদের তাদের স্থানীয় জলবায়ু, বাজারের পছন্দ এবং উদ্দেশ্যমূলক ব্যবহার (তাজা ব্যবহার বা প্রক্রিয়াকরণ) এর উপর ভিত্তি করে জাত নির্বাচন করা উচিত।

রোপণ কৌশলঃ আম গাছ সাধারণত বীজ, কলম বা মুকুলের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা হয়। বানিজ্যিক চাষের জন্য কলম করা চারা পছন্দ করা হয় কারণ তারা ফলের গুণমান এবং তাড়াতাড়ি ফল ধরার সামঞ্জস্য নিশ্চিত করে। পর্যাপ্ত সূর্যালোক এবং বায়ুপ্রবাহের জন্য রোপণের সময় সঠিক ব্যবধান (10m x 10m বা 8m x 8m বিভিন্নতার উপর নির্ভর করে) বজায় রাখতে হবে।

সেচ ও নিষিক্তকরণঃ নিয়মিত সেচ দেওয়া জরুরি, বিশেষ করে ফুল ও ফলের পর্যায়ে। শুষ্ক মৌসুমে সরাসরি রুট জোনে জল সরবরাহ করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে জলের অপচয় কম হয়। মাটির পুষ্টি বিশ্লেষণ এবং গাছের বৃদ্ধির পর্যায়ের উপর ভিত্তি করে সার প্রয়োগ করা উচিত। নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ সুষম সার সাধারণত ব্যবহার করা হয়।

পোকামাকড় ও রোগ ব্যবস্থাপনাঃ আম গাছ বিভিন্ন কীটপতঙ্গ এবং রোগের জন্য সংবেদনশীল যেমন আমের ফড়িং, ফলের মাছি, অ্যানথ্রাকনোজ, পাউডারি মিলডিউ এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত ব্ল্যাক স্পট। আমের পোকা দমন করতে সঠিক পরিমানে বালাই নাশক প্রয়োগ করতে হবে। সঠিক সময় সঠিক ঔষুধ প্রয়োগ করার মাদ্ধমে আমের রোগ প্রতিরোধ করা যায় ও ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব।

আমের নানান ধরনের জাত

পৃথিবীতে প্রায় ৩৫ ধরনের আম রয়েছে। কত রকম আমই না আমরা খেয়ে থাকি। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম হল সত্যিকার অর্থে ‘ফলের রাজপুত্তুর’। এখানকার আমের মধ্যে সেরা হলো ল্যাংড়া,ফজলি,ক্ষীরসাপাত,হিমসাগর,লক্ষণভোগ,মোহনভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই। আছে রানীপসন্দ, বেগম পসন্দ,বাদশাপসন্দ,আলফানসো।রাজশাহী ও নবাবগঞ্জে আছে ক্ষীরসাপাতি,বোম্বাই ক্ষীরসাপাতি, সর ক্ষীরসাপাতি, ছোট ক্ষীরসাপাতি, মোহনভোগ প্রভৃতি।


রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানে গিয়েও সব নাম লেখা সম্ভব নয়। একটা কথা বলে রাখি, যত গাছপাকাই হোক না, ওই গাছপাকা আম আরও তিন দিন রেখে খেলে তবেই আমের আসল ও মধুর স্বাদ পাওয়া যাবে। তখন আম হবে সত্যিকার অর্থে অমৃত ফল।বাংলাদেশে আবার উন্নত জাতের গবেষণাগারে উদ্ভাবিত আম হল বারি-১, বারি-২, বারি-৩ এবং বারি-৪। এখন নতুন যোগ হয়েছে আম্রপালি ও মল্লিকা। দিনাজপুরের সূর্যপুরীও বিখ্যাত।উৎকৃষ্ট জাতের আম স্বাদে-গন্ধে খুবই আকর্ষণীয়।

নানান জাতের আমের বর্ণনা 

হিমসাগর--
উৎকৃষ্ট স্বাদের সুগন্ধযুক্ত জাতের আমের মধ্যে হিমসাগরের অবস্থান প্রায় শীর্ষে। হিমসাগর আম জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকতে শুরু করে এবং পুরো জুন মাস বাজারে পাওয়া যায়। এ আমের ঠোঁট নেই, গড়ন বুকের দিকটা গোলাকার এবং অবতল থেকে সামান্য লম্বাটে আকার নিয়ে শীর্ষদেশ গোলাকৃতির হয়ে থাকে। পরিপক্ক হিমসাগর আমের রং হালকা সবুজ। পাকার পরেও সবুজ থেকে যায়। ত্বক মসৃণ, খোসা পাতলা।

ল্যাংড়া--
ল্যাংড়া আম হল আমের একটি বিখ্যাত জাত। দেশে যে কটি উৎকৃষ্ট জাতের আম এগুলোর মধ্যে ল্যাংড়া সবচেয়ে এগিয়ে। ল্যাংড়া আম দেখতে কিছুটা গোলাকার ও মসৃণ। এর নাক নিচের দিকে থাকে। বোঁটা চিকন। এর খোসা খুবই পাতলা। পাকা অবস্থায় হালকা সবুজ থেকে হালকা হলুদ রাং ধারণ করে। ফলের শাঁস হলুদাভ।

গোপালভোগ--
আমের মৌসুমের শুরুতে যে আমটির সুঘ্রান আম্রকাননের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে অর্থাৎ যে আমটি সবার আগে পাঁকে সেটি হলো গোপালভোগ আম । গোপালভোগ আম চিনার উপায় আমটির বোটা শক্ত, পাকার সময় বোটার আসে পাশের অংশ হলুদ রং ধারণ করে । আমটির আঁশ নেই, এই আমটি অনেক স্বাদযুক্ত ও সু-মিষ্ট । গোপালভোগের গায়ে সাধারণত হলুদ ছোপ ছোপ দাগ থাকে। এটির নিচের দিকে একটু সরু এবং পাকার পর হলুদ হয়ে যায়। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাজারে পাওয়া যায় পাওয়া যায় গোপালভোগ।

ক্ষীরসাপাতি আম--
ক্ষীরসাপাতি জাতের আম মাঝারি আকারের এবং অনেকটা ডিম্বাকৃতির। পাকা আমের ত্বকের রঙ সামান্য হলদে এবং শাঁসের রঙ হলুদাভ। শাঁস আঁশবিহীন,রসালো,গন্ধ আকর্ষণীয়,বেশ মিষ্টি ও গড় মিষ্টতা ২৩ শতাংশ। এসব বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় জিআই স্বীকৃত পেয়েছে ক্ষীরসাপাতি আম। 
খুবই মিষ্টি ক্ষীরসাপাতি আম অনেকে হিমসাগর বলে বিক্রি করেন। এই আম আকারে একটু বড় হয়। আমে হালকা দাগ থাকে। মে মাসের শেষে অথবা জুনের প্রথম দিকে পাওয়া যায় এ আম।

হাড়িভাঙ্গা--
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বিখ্যাত ও সুস্বাদু আম হাড়িভাঙ্গা। এ আমের উপরিভাগ তুলনামূলক বেশি মোটা ও চওড়া এবং নিচের অংশ অপেক্ষকৃত চিকন। এ আম মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা। চামড়া কুঁচকে যায় কিন্তু পঁচে না।

রাণী পছন্দ--
রাণী পছন্দ দেখতে অনেকটা গোপালভোগের মতোই। এর গায়েও হলুদ দাগ আছে কিন্তু আকারে ছোট। ফলে গোপালভোগের সঙ্গে রাণী পছন্দ মেশালে আলাদা করা কষ্টকর।
আশ্বিনা ও ফজলী--
আশ্বিনা আর ফজলী আম দেখতে একই রকম। তবে আশ্বিনা আম একটু বেশি সবুজ ও ফজলী আম খানিকটা হলুদ হয়। আশ্বিনার পেট মোটা হয় ও ফজলী দেখতে লম্বা ধরনের হয়।

আম্রপালি--
রূপালী আম বা আম্রপালি নিচের দিকে খানিকটা সুঁচালো এবং উপরে একটু গোলাকৃতির হয়। এই আম মিষ্টি বেশি ও স্বাদে অতুলনীয়।

হিমসাগর--
উৎকৃষ্ট স্বাদের সুগন্ধযুক্ত জাতের আমের মধ্যে হিমসাগরের অবস্থান প্রায় শীর্ষে। হিমসাগর আম জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকতে শুরু করে এবং পুরো জুন মাস বাজারে পাওয়া যায়। এ আমের ঠোঁট নেই, গড়ন বুকের দিকটা গোলাকার এবং অবতল থেকে সামান্য লম্বাটে আকার নিয়ে শীর্ষদেশ গোলাকৃতির হয়ে থাকে। পরিপক্ব হিমসাগর আমের রং হালকা সবুজ। পাকার পরেও সবুজ থেকে যায়। ত্বক মসৃণ, খোসা পাতলা।

সূর্যের ডিম আম বা মিয়াজাকি আম--
বিরল প্রজাতির মিয়াজাকি আম। জাপানের কিয়শুর মিয়াজাকি প্রিফেকচারের রাজধানী মিয়াজাকিতে উৎপন্ন হয় আম। আর ওই শহরের নামেই হয়েছে এই আমের নামকরণ। আমটি দেখতে অনেকটা ডায়নোসরের ডিমের মতো। তাই এই আমকে জাপানি ভাষায় “তাইয়ো-নো-তামাগো” বলেও ডাকা হয়। অর্থ- ‘এগ অব দ্য সান’ বা সূর্যডিম। বিশ্ববাজারে এটি আবার ‘রেড ম্যাঙ্গো’ নামেও পরিচিত। 

আকারে বড় হওয়ার পাশাপাশি এক একেকটি আমের ওজন হয় প্রায় ৩৫০ গ্রাম হয়। অন্য আমের তুলনায় এতে শর্করার পরিমাণ ১৫ শতাংশ বেশি। যে কারণে, এটি বেশ মিষ্টি। এছাড়া এই আমগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন ও ফলিক অ্যাসিড। দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় এই আম ভীষণ উপকারী। আর এই কারণে এই আমের চাহিদাও গোটা বিশ্বে অনেক বেশি। আর দামও আকাশছোঁয়া।

আম কেনার সময় করণীয় 

আম কিনতে গেলে যে বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল করতে হবে তা হল- আমের ওপর মাছি বসে কিনা। আমে রাসায়নিক বা কার্বাইড দেওয়া থাকলে সে আমের উপরে কখনই মাছি বসবে না। গাছপাকা আমের উপর অবশ্যই মাছি বসবে। প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম পানিতে ছেড়ে দিলে তা সহজেই ডুবে যাবে। 

অন্যদিকে রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আম হালকা হয়, তাই এটি ভেসে থাকবে। আস্ত ফল সরাসরি খাবেন না। বাজার থেকে আম এনে খাওয়ার আগে অন্তত ১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে নিন। এবার খোসা ছাড়িয়ে উপভোগ করুন মজার ও পুষ্টিকর প্রিয় ফল আম।

লেখকের মন্তব্য

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা আমের ইতিহাস ও চাষাবাদ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন আশা করি ।আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি পাকা আম কিনার সময়ের সব তথ্য জানতে পেরেছেন । এ রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন । আজকের আর্টিকেল টি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার পরিবার ও বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন , ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url